লালবাগ কেল্লা রোডের মূল গেটের সামনের তিন তলা একটি বাসা। ওই বাসার তিনতলার একটি কক্ষে থাকতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন। তারা ৬ মাস আগে ওই কক্ষটি ভাড়া নিয়েছিলেন। গত শুক্রবার ভোররাতে এই ৩ জনকে বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। তাদের
নিয়ে যাওয়ার সময় চোখ বেঁধে নিয়ে গেছে। হাতে হ্যান্ডকাফ পরানো ছিল। শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় অস্ত্রসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবি দাবি করেছে, শনিবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্রদলের ৬ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি রিভলবার, ১টি ম্যাগাজিন ও ৩৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া নেতারা হলেনÑ ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান (৩১), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ (২৯), সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ (৩০), সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান হাসান (৩২), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহ (৩০)।
গতকাল সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্র সংগ্রহ করছিলেন ছাত্রদল নেতারা। তারা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তারা অস্ত্র সংগ্রহ করে এই পরিকল্পনা করছিলেন। তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কথোপকথনের সূত্রে কাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে সেই তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, শুক্রবার এই ৬ ছাত্রদল নেতাকে ডিবি তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু ডিবি দাবি করেছে যে, শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, মামলার এজাহারে যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে সেই তারিখে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি। সরকারি দলের অনেক নেতাকর্মী অস্ত্রসহ মহড়া দিলেও তাদের ধরা হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান, উদ্ধার হওয়া রিভলবারগুলোতে মরিচা পড়ে গেছে। এগুলো কতোদিন আগের? জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য আমরা জানবো।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি রিফাত রহমান শামীম, ডিএমপি’র (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি ও ডিবির গুলশান বিভাগের এসি বার্নাড এরিক বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২৩ দিন আগে বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫