ইরানে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সময় সামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে হত্যার অভিযোগে ২ বিক্ষোভকারীর ফাঁসি কার্যকর করেছে ইরান। এরা হলেন, মোহাম্মদ মাহদি কারামি এবং সেয়েদ মোহাম্মদ হোসেইনি। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধা-সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথিত অভিযোগে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এই বিচার প্রক্রিয়াকে ছল হিসেবে উল্লেখ করে মানবাধিকার
গ্রুপগুলো এর নিন্দা করেছে।কারামির বয়স হয়েছিল ২২ বছর। তার পরিবার বলছে ফাঁসি কার্যকর করার আগে তারা তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল কিন্তু তাদেরকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সরকারি কৌসুলিরা দাবি করেছেন, আধা-সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা রুহুল্লা আজামিয়ানকে নগ্ন করে তার পর তাকে হত্যা করা হয়।
তারা বলছেন, একদল বিক্ষোভকারী যারা নিহত একজন প্রতিবাদকারীর প্রতি সম্মান জানাতে জড়ো হয়েছিলেন তারা ওই কর্মকর্তাকে হত্যা করেন।
ইরানে গত সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর পর সারা দেশে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশের যে বাহিনী নীতি ও নৈতিকতা রক্ষার জন্য কাজ করে তারা “ঠিক মতো হিজাব না পরার” অভিযোগে ওই তরুণীকে আটক করেছিল।
ধারণা করা হয় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৫১৬ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ জন শিশু। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৬২ জনকে।
ইরানের বাইরে অবস্থিত হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস নিউজ এজেন্সির হিসেবে আরো বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভের সময় যাদের আটক করা হয়েছে তাদের অনেককেই গুম করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে তাদের কাউকে কাউকে গোপন স্থানে আটক করে রাখা হয়েছে। এবং তাদের সঙ্গে কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অনেকের ওপর নির্যাতন ও খারাপ আচরণ করারও অভিযোগ উঠেছে।
ইরানি কর্মকর্তারা প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভকে “দাঙ্গা” হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন এর পেছনে “বিদেশি শক্তির” হাত রয়েছে।
গতকাল শনিবার যে দুজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয় তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। তারা অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাদের নির্যাতন করা হয়েছে।
হোসেইনির আইনজীবীরা বলেছেন কারাগারে তার চোখ বেঁধে মারধর করা হয়েছে।
৩ দিন আগে বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫